বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে পরিচালিত প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ জরীপের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ লক্ষ নারী ও পুরুষকে কোন না কোনভাবে প্রতিবন্ধী হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের শিক্ষা,প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তাই জাতি ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে শিক্ষা-প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তারই অংশ হিসেবে সমাজসেবা অধিদফতর প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আত্ব-নির্ভরশীল এবং উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠিতে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ১৯৭৮ সালে টঙ্গীতে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (এনটিআরসিবি) স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি(সিডা)-র আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (ইআরসিপিএইচ) স্থাপন করা হয়।বর্তমানে ইআরসিপিএইচ কেন্দ্রের অভ্যন্তর জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষণ ও পূনর্বাসন কেন্দ্র (এনটিআরসিবি) পরিচালিত হচ্ছে।
১৫ হতে ৪০ বছর বয়সের নুন্যতম ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে চাকুরী অথবা স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়। প্রশিক্ষণ উত্তীর্ণ সকলকেই জনপ্রতি ৪,০০০/- (চার হাজার) টাকা করে পুনর্বাসন অনুদান প্রদান করা হয়।কেন্দ্রের ৫০ টি আসন সংরক্ষিত আছে। ৬ মাস মেয়াদী ট্রেডসমুহে দ্বিবার্ষিক পদ্ধতিতে ছাত্র ভর্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
সেবাঃ প্রতিবন্ধী নিবাসীদের সরকারী খরচে একত্রে মোট ৫০ জনের থাকা খাওয়ার আবাসন সুবিধা সহ চিকিৎসা, খেলাধূলা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ রয়েছে। নিবাসীদের দেখাশুনার জন্য ১ জন ওয়ার্ডার সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন।
প্লেসমেন্ট সার্ভিসঃ প্রশিক্ষণ উত্তীর্ণ প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরী প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসনকল্পে এবং স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনকৃত প্রতিবন্ধীদের ফলোআপন কাজে ১ জন প্লেসমেন্ট অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। এ পর্যন্ত মোট ৭৪ জনকে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে এবং ৬৮৩ জনকে স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে।